








নোটিশ বোর্ড/ বিজ্ঞপ্তি
ভর্তি তথ্য: সকল শিক্ষার্থীদেরকে আগামী 12/05/2024 তারিখের মাধ্যে মাদ্রাসা অফিস কক্ষে যোগাযোগ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া গেল।
Video
মুহতামিম

জনাব মাওঃ আশেক এলাহী সাহেব
পিতা: মরহুম মাও: মোবারক করিম সাহেব
উজানী, কচুয়া, চাঁদপুর, ০১৮১১-২৭০৩৯৫।
মাদরাসার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

জামিয়া ইসলামিয়া শামছুল উলূম মাদরাসার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
’ধর্মীয় শিক্ষ জাতির মেরুদন্ড’ একথা অবশ্য বলার অপেক্ষা রাখে না ; কেননা প্রায় দেড় হাজার বছর পূর্বে মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রিয় হাবীব হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ওহী বাহক হযরত জিব্রাইল আ. এর মাধ্যমে কুরআনুল কারীমের প্রথম সূচনা করে ইরশাদ করেন, ‘পড়! তোমার প্রভূর নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন’ এর দ্বারা প্রতিয়মান হয় যে, আল্লাহ তায়ালা ধর্মীয় শিক্ষাকে মানুষ ও সমাজ গড়ার সর্বোত্তম মাধ্যম সব্যস্ত করেছেন। কেবল জাতীয় আদর্শ ও মূল্যবোধের ভিত্তিতে প্রণীত নৈতিকতা সমৃদ্ধ ধর্মভিত্তিক শিক্ষাই এ মেরুদন্ড ও হাতিয়ারকে সুদৃঢ করতে সক্ষম।
শিক্ষা কখনো মানুষকে প্রকৃত মনুষ্যত্ব উপহার দিতে পারে না। রাশিয়া, চীন, ইউরোপ ও আমেরিকা ইত্যাদি দেশের চলমান সামাজিক অবস্থা এর বাস্তব প্রমান । পাশ্চত্য সমাজ আজ যে আদর্শ সঙ্কটে নিমজ্জিত এর একমাত্র কারণ হচ্ছে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার প্রতি উদাসিনতা। এতএব, নীতি বহির্ভূত শিক্ষা কোন দেশ ও জাতির জন্য সফলতা আনতে পারে না।
1757 সালে পলাশীর প্রান্তরে নবাব সিরাজোদৌলার পরাজয়ের মধ্যে দিয়ে এ উপ-মহাদেশে ইংরেজ বেনিয়াদের শাসন ক্ষমতা পাকা পোক্ত হয়। সূচনা হয় মুসলমাদের উপর অকথ্য নির্যতন। চলতে থাকে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসন। ইংরেজদের আগ্রাসনের শিকার হয় এ ভারত উপ মহাদেশের ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও। তাদের ষড়যন্ত্রে বিলুপ্ত হয় শত শত বছর ধরে চলে আসা ধর্ম ভিত্তিক একমূখী শিক্ষা ব্যবস্থা। মূলত বৃটিশদের আগ্রাসনের পূর্বে এ দেশে একমাত্র ধর্মভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থাই চালু ছিল। চলমান অবস্থার ন্যায় মাদরাসা শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষা বলতে পৃথক কোন শিক্ষাব্যবস্থা ছিল না।
ইংরেজ সরকার মুসলমানদের ধর্মীয় চেতনাকে খতম করার নিমিত্তে ইসলামী শিক্ষার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে। শেষ পর্যন্ত 1835 সালে ব্রিটিশদের হাতে সেকুলার শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে উক্ত ষড়যন্ত্র পাকাপোক্ত হয়। ইংরেজরা এ দেশে তাদের শিক্ষাব্যবস্থা চালু করেছিলো সু-দূর প্রশারী সু-নির্দিষ্ট আদর্শ ও লক্ষ সামনে রেখে। 1835ইং সনের শিক্ষা পরিকল্পনার প্রধান দিক নির্দেশনাকারি লর্ড মেকেল বলেন। বর্তমানে ভারতবর্ষে আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে। যাতে এমন এক জাতি সৃষ্টি হয়, যারা আমাদের ও আমরা যাদের শাসন করছি, তাদের মাঝে দূতের কাজ করবে। এরা এমন ধরণের মানুষ হবে যারা রক্তে ও গায়ের রঙে হবে ভারতীয় কিন্তু চিন্তা –চেতনা, নৈতিকতা ও বুদ্ধি ভিত্তিতে হবে ইংরেজ! এভাবে ব্রিটিশদের মাধ্যমে পাশ্চ্যতোর সেকুলার শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের সমাজে স্থায়ী আসন গেড়ে বসে। 1879 খ্রিষ্টাব্দে সিপাহী জনতার স্বাধীনতা আন্দোলন আপাতত দৃষ্টিতে ব্যর্থ হওয়ায় উপমহাদেশের উপর বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদীরা তাদের দখলকে আরো সু-সংহত করে নেয়। মুসলমানদের উপর নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দানকারী আলেমসমাজ ছিলেন এ নির্যাতনের মূল শিকার। এক পর্যায়ে এ উপমহাদেশে আলেম শূণ্য হয়ে পড়ে। ব্রিটিশদের শাসন-শোষনে মুসালমানদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষা-সংস্কৃতিতে নেমে আসে মহা বিপর্যয়। মুসলিম সমাজে ধর্মীয়।
’নেতৃত্ব দেয়ার মতো আলেম তো দূরের কথা দাফন কাফন দেয়ার মত ন্যুনতম জ্ঞানের অধিকারী কোন আলেমও অবশিষ্ট থাকেনি ।
এমনি মহুর্তে নববী ইলমের আলোয় সু-সজ্জিত একদল মানুষ তৈরির লক্ষ্যে, সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই সাধারণ মানুষের সার্বিক সহযোগিতায়, ইসলামী তাহজীব ও তামাদ্দুন টিকিয়ে রাখার পাশাপাশি, নিজেদের হারানো ঐতিহ্যকে পুনুরুদ্ধারে ছয়জন মনিষী এক অভিনব ধারার সূচনা করে 1866 খ্রিস্টাব্দে 3 মে মোতাবেক 15ই মহররম 1283 হিজরিতে প্রতিষ্টিত করেন, বিশ্ববিখ্যাত ইসলামী বিদ্যাপিঠ ‘দারুল উলূম দেওবন্দ’।
আকাবিরে সিত্তা বা প্রতিষ্ঠাতা ছয় মনিষীর নামঃ-
১. মাওলানা যুলফিকার আলী
জন্ম: 1819 ই/1237 হি. 45 বছর ; মৃত্যু:1904ইং/1322হি.
২. মাওলানা ফজলুর রহমান
জন্ম:1829 ইং/1247হি. 35 বছর; মৃত্যু: 1907ইং/1325হি.
৩. মাওলানা কাসিম নানুতুবী, জন্ম: 1832ইং /1248 হি. 34 বছর ; মৃত্যু: 1880 ইং/ 1297 হি.
৪. মাওলানা ইয়াকুব নানুতুবী জন্ম: 1833ইং/ 1249 হি. 33 বছর; মৃত্যু:1884ইং/1302 হি.
৫. হাজী আবেদ হুসাইন, জন্ম: 1834ইং /1250 হি. 32 বছর; মৃত্যু: 1912ইং/ 1328
৬. মাওলানা রফিউদ্দীন, জন্ম: 1836 ইং /1252 হি. 30 বছর; মৃত্যু: 1890ইং/1306 হি.
সুনির্দিষ্ট ব্যপক লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও ভারসাম্য পূণ্য সার্বজনীন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটি সর্বজন সমাদৃত হয়ে উঠে এবং কেদ্রুীয় প্রত্যিষ্ঠানে মর্যাদা লাভ করে। এরই শিক্ষা ধারা অনুসরণে প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে অসংখ্য দীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আমাদের এ প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশেও স্বাধীনতার আগে ও পরে এ ধারায় গড়ে উঠে অনেক প্রতিষ্ঠান। যেগুলো সু-শৃঙ্খল ও শান্তিময় সমাজ বিনির্মানে আদর্শ জাতি গঠনসহ মানুষের ধর্মীয় প্রয়োজন পূরণে বড় ধরনের ভূমিকা পালন করে আসছে। আল-জামি’আতুল ইসলামিয়া শামসুল উলুম মহামায়া, দারুল উলুম দেওবন্দের শিক্ষা ধারায় পরিচালিত একটি দীনি প্রতিষ্ঠান। যা দীর্ঘ 35 বছরের ও বেশী সময়ধরে এ দেশের তথা চাঁদপুরবাসির ধর্মীয় প্রয়োজন পূরণ বিরাট ভূমিকা পালন করে আসছে। বিশেষ প্রয়োজনে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সর্ম্পকে জানা একান্ত আবশ্যক।
জামি’আর পরিচিতিঃ-
নাম : আল জামি’আতুল ইসলামিয়া শামসুল উলুম (মহামায়া)
প্রতিষ্ঠান : 1404 হিজরি মোতাবেক 1983 খ্রিষ্টাব্দ মোতাবেক 1390 বঙ্গাব্দ
ভৌগলিক অবস্থানঃ-
চাঁদপুর জিলাধীন চাঁদপুর-কুমিল্লা মহাসড়কের দক্ষিণ পার্শ্বে মহামায়া বাজার উপাকন্ঠে লোধেরগাঁও গ্রামে ৪০ শতাংশ ভূমির উপর ঐতিহ্যবাহী মহামায়া মাদরাসা অবস্থিত। (চাঁদপুর থেকে ১১ মি.মি. পূর্বে এবং কুমিল্লা থেকে ৫৮ কি.মি পশ্চিমে)।
প্রতিষ্ঠাতা ও প্রতিষ্ঠাকালিন মোহতামিম-
আলহাজ হযরত মাওলানা আব্দুল হাই আল কাসেমী বিন ক্বারী ইমাম আলী।
মতাদর্শ – আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আতের মতাদর্শে বিশ্বাসী এবং দারুল উলূম দেওবন্দ এর মাসলাক ও মাশরাব অনুসারী।
লক্ষ উদ্দেশ্যঃ- দ্বীনের জন্য নিবেদিত প্রান যোগ্য আলেম তৈরী করা যারা ইলম আমল হবে সালাফে সালেহীনের পূর্ন অনুসারী।
আয়ের উৎস : মাসিক, বাৎসরিক, এককালীন চাঁদা, যাকাত-ফিতরা, সদকা ও কোরবানির চামড়া ইত্যাদি।
বৈশিষ্ট্যঃ-
সম্পূর্ন বেসরকারি খালেস একটি দীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আর্থিক অপ্রতুলতা সত্ত্বেও প্রতিভাবান ও মেধাবী ছাত্রদের উৎসাহ উদ্দীপনা বৃদ্ধির লক্ষে গরীব মেধাবী ছাত্রদের ফ্রি খোরাকীসহ সাধ্যমত আর্থিক সহযোগীতা করা হয়। সর্বোপরী ছাত্রদের আমল আখলাক ও পড়াশুনার উন্নতীর জন্য বিচক্ষণ ও সুযোগ্য শিক্ষকমন্ডলী সার্বক্ষনিক তত্ত্বাবধান করে থাকেন। যার ফলশ্রুতিতে এ মাদরাসার ছাত্ররা বেফাক বোর্ডের কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় মেধা তালিকায় স্থান লাভের পাশাপাশি প্রতিভা ও উন্নত চরিত্রের স্বাক্ষর রেখে বিজ্ঞ মহলের প্রশংসা কুড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, খোদ বেফাক বোর্ডের পক্ষ থেকে ধারাবাহিকভাবে উন্নতি ও আদর্শিক বিচারে এ মাদরাসা বাংলাদেশের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের মাঝে একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
আবাসিক ছাত্রবাসঃ-
লেখাপড়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নৈতিক চরিত্র গঠন, বাহিরের প্রতিকুল পরিবেশ থেকে প্রভাবমুক্ত রাখার জন্য শিক্ষকমন্ডলি দ্বারা সার্বক্ষানিক নিয়ন্ত্রিত ছাত্রাবাসের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। আমাদের মাদরাসা এখনো তা প্থক ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি বিধায় শ্রেনি কক্ষকেই আবাসিক হলরুম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে ভবিষ্যতে শ্রেণি কক্ষ পৃথক করার জন্য হযরত মোহতামিম সাহেবের বিশেষ পরিকল্পনাধীন।
মাসিক আত্মশুদ্ধি জলসা: মসজিদ কমিটি ও এলাকার দ্বীন পিপাসু মুসল্লিদের অনুরোধক্রমে অত্র মাদরাসার সুনামধন্য মুহতামিম আল্লামা আশেক এলাহী সাহেব বিশেষ বাদ মাগরিব একটি আত্মশুদ্ধিমূলক মাহফিল করে থাকেন।
লাইব্রেরি বা কুতুবখানাঃ-
কুতুবখানা বা লাইব্রেরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবিচেছদ্য অংশ। কেননা কওমি মাদরাসার প্রয়োজনীয়তা আরেকটু বেশি। কারণ এ সকল মাদরাসায় ছাত্রদেরকে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রতি বছর শিক্ষাবর্ষের সমাপ্তিকাল পর্যন্ত কিতাব দেয়া হয়। তাছাড়া একটি উঁচু মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার প্রয়োজনে সিলেবাসভুক্ত কিতাব ব্যতিত আরও অনেক ভাষাগ্রন্থ, সহযোগী হাদিস, তাফসির ও ফিকাহ বিভাগের যাবতীয় কিতাবাদী সংগ্রহীত থাকা আবশ্যক। আমাদের কুতুবখানায় সে অনুযায়ী কিতাবাদী অনেক কম। তাই শুভাকাঙ্খিদের সুদৃষ্টি কামনা কাম্য।
মুহতামিমগণের নাম ও কার্যদিবস...
